ঈদের পর ফাঁকা ঢাকায় ভোরে ছিনতাইয়ের শঙ্কা, সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ঈদকে কেন্দ্র করে ফাঁকা ঢাকায় ভোরে ছিনতাইয়ের শঙ্কায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঈদের ছুটি শেষে  ঢাকায় ফেরত আসা নগরবাসীর নিরাপত্তার কথা ভেবে বিশেষ এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ফাঁকা ঢাকায় ছিনতাই প্রতিরোধে আগের চাইতে মোবাইল পেট্রোল, ফুট পেট্রোল, টহল ও চেকপোস্ট বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সড়কে গতিরোধক বসিয়ে চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। ঈদের পরবর্তী কয়েকদিন ভোরে গ্রাম থেকে ঢাকায় ফেরা যাত্রীরা ছিনতাইয়ের শিকার হতে পারেন শঙ্কায় বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং স্টেশন এলাকায় নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, ছিনতাই প্রতিরোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পোশাকধারী পুলিশি টহলের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দারাও কাজ করছেন। এছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী চক্রের অনেক সদস্যকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেলের মাধ্যমে টানা পার্টির দৌড়াত্ম্য বেড়ে গিয়েছিল। এছাড়া ছিনতাইকারীরা ভোরের দিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই করে আসছিল। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারও একাধিক মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ভোরের ছিনতাই বন্ধ করতে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের নির্দেশনা দিয়েছেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, রাজধানীকেন্দ্রিক একাধিক চক্র রয়েছে যারা মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার নিয়ে ছিনতাই করে বেড়ায়। তাদের কাছে কোনও দেশীয় বা অন্য আগ্নেয়াস্ত্র থাকে না। মোটরসাইকেল বা গাড়ির বৈধ কাগজপত্র নিয়ে সড়কে বের হয়ে তারা রিকশাআরোহীদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ ধরে টান দিয়ে নিয়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যাগ থেকে টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে ব্যাগ ফেলে দিয়ে চলে যায়। ফলে চেকপোস্টে তল্লাশি করেও সন্দেহমূলক কিছু পাওয়া যায় না এই চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে।

গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, গত কয়েক বছরে একাধিক ঘটনায় একাধিক নারী রিকশা থেকে ছিটকে পড়ে মারা যান। এরপর এই চক্রের বেশ কয়েকজন সদস্যকে ধরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। সম্প্রতি এই চক্রটি আবারও তৎপর হয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের ওপর টার্গেট করতে পারে বলে আগে থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, ছিনতাইকারী এই চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন টার্মিনাল এলাকায় ওৎ পেতে থাকে। তারা কোনও যাত্রীকে একা রিকশায় উঠতে দেখলেই পিছু নেয়। তারপর সুযোগ বুঝে ছোঁ মেরে মালামাল নিয়ে সটকে পড়ে।

ওই কর্মকর্তা জানান, অনেক সময় ভোরের দিকে কিছু বাসের চালক ও হেলপার মিলেও একা যাত্রীদের কাছ থেকে স্বর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। এজন্য আগে থেকেই একাধিক যাত্রী রয়েছে এমন বাসে ওঠা নিরাপদ। একই সঙ্গে আলো ফোটার আগে টার্মিনাল এলাকা থেকে ঢাকার বাসার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু না করা উচিত। একই সঙ্গে সতর্কতার সঙ্গে ভোরের দিকে চলাফেরা করলে যে কোনও বিপদকেই পাশ কাটানো সম্ভব। কোনও ধরণের ছিনতাইয়ের মুখোমুখি হলেই তাৎক্ষণিক ৯৯৯ এ কল করে পুলিশকে জানালে পুলিশও বেতারবার্তার মাধ্যমে সড়কে টহলে থাকা সদস্যদের তথ্য দিতে পারে। বাংলা ট্রিবিউন

primetvbd_primetvbd

Learn More →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *