ঋণ পরিশোধে অক্ষমতার কারণে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি এখন বিপর্যস্ত৷ এটা কিন্তু শ্রীলঙ্কার একার সমস্যাই নয়। বিশ্বের আরও বিভিন্ন দেশ এখন এমন কঠিন বাস্তবতার মুখে দাঁড়িয়ে। সংখ্যাটা কম নয়, ডজনখানেক। শুধু কি তাই? এই তালিকায় রয়েছে এমন সব দেশের নাম, যে সব দেশের কথা ভাবাই যায় না। আর, সে কারণেই রীতিমতো আঁতকে উঠছেন আর্থিক বিশেষজ্ঞরা। শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ থেকে অতিখারাপ হচ্ছে। শুধরে ওঠার নামগন্ধ নেই। আর্থিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শ্রীলঙ্কার মতো তালিকায় রয়েছে লেবানন, সুরিনাম, জাম্বিয়া এমনকী রাশিয়ার মত দেশও। বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ দেশ বেলারুশও। ক্রমবর্দ্ধমান ঋণের খরচ, মুদ্রাস্ফীতির মত বিপদগুলো এই সব দেশকে ইতিমধ্যেই ঘিরে ধরেছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে আরো বলা হয়ঃ বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়ে উন্নয়ন করা এবং ঋণ শোধের মাধ্যমে ফের ঋণ পাওয়ার যোগ্য হয়ে ওঠা, এই পথে হেঁটেই উন্নয়নকে তুলে ধরেছে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো। কিন্তু, আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডারের তালিকা দেখলেই বোঝা যাবে যে বহু দেশ ঠিকমতো ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না।
তালিকার অন্যতম নাম আর্জেন্টিনা। তালিকায় আছে ইউক্রেন, তিউনিসিয়া, ঘানা, মিশর, কেনিয়া, ইথিওপিয়া, এল সালভাদোর, পাকিস্তান, বেলারুশ, ইকুয়েডর, নাইজেরিয়ার মতো দেশগুলো। এইসব দেশগুলোর মুদ্রার মান ক্রমশই কমছে। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় তলানিতে ঠেকেছে। এমনকী, ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রেও তৈরি হয়েছে নানা বিধিনিষেধ। যার ফলে ওই সব দেশগুলোর পরিস্থিতি অদূর ভবিষ্যতে শ্রীলঙ্কার মত হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই বলেই মনে করছেন আর্থিক বিশেষজ্ঞরা। নতুন করে ঋণ না-মেলায় শ্রীলঙ্কা যেমন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে পারছে না, অদূর ভবিষ্যতে ওই সব দেশগুলোতেও তেমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলেই তাদের আশঙ্কা। ইতিমধ্যে পরিস্থিতি সামলাতে ওই সব দেশের প্রশাসন জিনিসপত্রের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু, তাতেও বিশেষ লাভ হচ্ছে না। কারণ, মুদ্রার মান অত্যন্ত কমে গিয়েছে। যার ফলে বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়ার জন্য ওই সব দেশগুলোকে আগের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি অর্থ দিতে হচ্ছে। মানবজমিন