মতলবে পালিত হচ্ছে লক্ষ্মী পূজা

স্টাফ রিপোর্টারঃ

সারা দেশের ন্যায় মতলব দক্ষিণে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিটি পরিবারে শারদীয় দুর্গোৎসবের পরবর্তী পূর্ণিমা তিথিতে ধনসম্পদ তথা ঐশ্বর্যের দেবী হিসেবে শ্রী শ্রী লক্ষ্মী দেবী’র পূজা পালিত হচ্ছে।

২৪ আশ্বিন ১৪২৯ বঙ্গাব্দ রোজ রবিবার দেবীপক্ষের আশ্বিনী শুক্ল পক্ষের পূর্ণিমা তিথি, এই দিনে মতলব দক্ষিণে প্রতিটি পরিবারে জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে পালিত হচ্ছে শ্রী শ্রী লক্ষ্মী মায়ের পূজা। সনাতন সংস্কৃতি ও বৈদিক শাস্ত্রমতে, লক্ষ্মী ধনসম্পদ, সৌভাগ্য ও সৌন্দর্যের দেবী। ধনের দেবী লক্ষ্মী হলেও চতুর্ভূজা লক্ষ্মীদেবী চর্তুবর্গ ফল প্রদান করেন। যথাঃ ধর্ম, অর্থ, কর্ম ও মোক্ষ।

জানা যায় যে, মতলব দক্ষিণ উপজেলার আওতায় পৌরসভাস্থ সকল ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পরিষদের সকল সনাতন পরিবারে একযোগে শ্রী শ্রী লক্ষ্মী দেবীর পূজা পালিত হবে।

শ্রী শ্রী লক্ষ্মী দেবীর প্রতি করোজোর করে প্রণামমন্ত্রঃ
ওঁ বিশ্বরুপস্য ভার্যাসি পদ্মে পদ্মালয়ে শুভে।
সর্বতঃ পাহি মাং দেবী মহালক্ষ্মী নমোস্তুতে।।

শ্রী শ্রী লক্ষ্মী দেবীর বাহন পেঁচা। বিষ্ণু রাম ও কৃষ্ণ রূপে অবতার গ্রহণ করলে, লক্ষ্মী সীতা ও রাধা রূপে তাদের সঙ্গিনী হন। কোজাগরী পূর্ণিমা রাতে দেবী লক্ষ্মী ধনধান্যে ভরিয়ে দিতে ভক্ত গৃহে আসেন। প্রাচীনকাল থেকেই রাজা-মহারাজা, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ গৃহস্থেরর সবাই দেবী লক্ষ্মীর পূজা দিয়ে থাকেন।

লক্ষ্মীকে নিয়ে বাংলার জনসমাজে বিভিন্ন জনপ্রিয় গল্প প্রচলিত আছে। এই গল্পগুলো পাঁচালীর আকারে লক্ষ্মীপূজার দিন পাঠ করা হয়। একে লক্ষ্মীর পাঁচালী বলা হয়। লক্ষ্মীপূজার গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ হলো— সিঁদুর, ঘট, ধান, মাটি, আম্রপল্লব, ফুল, দুর্বা, তুলসীপাতা, হরীতকী, চন্দন, ধূপ, দীপ, নৈবেদ্য, আতপচাল ও জল। লক্ষ্মীপূজায় মঙ্গলঘট, ধানের ছড়ার সঙ্গে গৃহস্থের আঙিনায় শোভা পায় চালের গুঁড়োর আল্পনায় লক্ষ্মীর ছাপ। এ উপলক্ষে প্রত্যেক পরিবারে রমণীরা উপবাসব্রত পালন করেন।

জেনে নিন, শ্রী শ্রী লক্ষ্মী পূজায় কিছু বিধি নিষেধ রয়েছে-
ঘন্টা বাজানো নিষেধ, তুলসী পত্র নিষেধ, ধুপ-দীপ ডান দিকে রাখা, লোহার বাসন নিষেধ, সাদা বা কালো বস্ত্রে মূর্তি রাখা নিষেধ, পূজায় সাদা ফুল নিষেধ, বাড়ী ঘর পরিস্কার পরিচন্ন রাখা, ময়লা জামা কাপড় না পরা, ভুলেও কারো সাথে ঝগড়া বিবাদ না করা, পূজায় চিৎকার চেঁচামেচি না করা, পূজার সময় অন্য মনস্ক না হওয়া।

লক্ষ্মীপূজায় রাত্রি জাগরণ করা হয়। কোজাগরী অর্থাৎ কে জাগরী বা কে জেগে আছে। শাস্ত্র মতে এই রাতে লক্ষ্মী সবার বাড়িতে যান। যে গৃহের দরজা বন্ধ থাকে ও গৃহস্থরা ঘুমিয়ে থাকেন, সেখান থেকে লক্ষ্মী ফিরে আসেন। এ কারণে এই লক্ষ্মী পূজাকে কোজাগরী বলা হয় এবং রাত্রি জাগরণের নিয়ম রয়েছে। আজ বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রত্যেক ঘরে ঘরেই দেবী লক্ষ্মীর পূজা করা হবে। হিন্দু পরিবারের গৃহস্থরা প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীর পূজা করে থাকেন।

primetvbd_primetvbd

Learn More →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *