স্টাফ রিপোর্টারঃ-
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় বরের হাত ধুয়ে দেওয়ার বিনিময়ে বকশিশ নেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে পণ্ড হয়ে গেছে বিয়ে।
গত রবিবার (১৬ অক্টোবর) বিকালে মুরাদনগর উপজেলার ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের নেয়ামতকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের দেবিদ্বার ও মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন তারা। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় অভিযোগ দিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকালে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, বর ও কনেপক্ষের সংঘর্ষের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের এক যুবক মুরাদনগর উপজেলার ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের নেয়ামতকান্দি গ্রামের এক তরুণীকে বিয়ে করতে আসেন গত রবিবার। বর ও কনেপক্ষ ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। উভয় পক্ষের সম্মতিতে পারিবারিকভাবে বিয়ের আয়োজন করা হয়।
দুপুরের পর বরযাত্রী কনের বাড়িতে গেলে গেটের সালামি নিয়ে প্রথমে দুই পক্ষের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে খাওয়ার এক পর্যায়ে বরপক্ষকে পরিমাণে কম খাবার দেওয়ায় এবং বরের হাত ধোয়ানোর বকশিশ নিয়ে আবারও দুই পক্ষের বাগবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষ হাতাহাতি থেকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে বরপক্ষের ১৫ থেকে ২০ জন ও কনেপক্ষের ৮ থেকে ১০ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সংঘর্ষের কারণে বিয়ে সম্পন্ন না করেই ফিরে যান বরযাত্রী।
এ ঘটনায় কনের বড় ভাই মুরাদনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, বরপক্ষ ১৫০ জন বরযাত্রী নিয়ে আসার কথা থাকলেও আসেন ১৬০ জন। তাদের খাওয়া শেষ করার পর বরের হাত ধোয়ার বকশিশ নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে বরপক্ষের লোকজন কনেপক্ষের লোকদের গালাগলি করেন এবং মেয়েদের মারধর ও শ্লীলতাহানি করেন। এ অবস্থায় কনেপক্ষের মুরুব্বিরা বরপক্ষকে শান্ত করতে গেলে তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান। এতে কনেসহ ৮ থেকে ১০ জন আহত হন। বরপক্ষের লোকজন কনের কক্ষে ঢুকে স্বর্নালংকারসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে বরের ভাই জানান, বিয়ে বাড়ির গেটে আসার পর বকশিশের জন্য চাপ দেন কনেপক্ষের লোকজন। পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার পরও অতিরিক্ত ৫০০ টাকা না দেওয়ায় কনেপক্ষের লোকজন গেটের চেয়ার-টেবিল ছুড়ে ফেলে দেন। বরযাত্রী ১৩০ জন যাওয়ার কথা থাকলেও ১২০ জন গিয়েছি। তারপরও বরপক্ষের লোকদের খাবার দিতে পারেনি। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বরের শেরওয়ানি ছিঁড়ে ফেলে তারা। এরপর বরপক্ষের লোকদের ওপর হামলা চালায়। থামাতে গিয়ে মারধরে অচেতন হয়ে পড়েন বলে জানান বরের ভাই।