স্টাফ রিপোর্ট
ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন উপকূলবাসী। এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’র প্রভাবে প্রায় সারা দেশে ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। বাতাসে তীব্রতাও ধীরে ধীরে বাড়ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঝড়ের ঝুকি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে ভোলাসহ সাতটি সমিতিরই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী এই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
এদিকে পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ওজোপাডিকো) জানায়, তাদের সব এলাকা ঝুকির মুখে নেই। তনে যে কয়টি জেলা পড়েছে সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু আছে। তবে ঝড়ো হাওয়ার কারণে কিছু এলাকায় এমনিতে বিদ্যুৎ বিতরণ বন্ধ হয়ে গেছে।
আরইবি জানায়, সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী আরইবির অধীন বরিশাল ১, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, খুলনা, বাগেরহাট পিবিএস এর ১৬ লাখ ১২ হাজার গ্রাহক এখন বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় আছে। এ সময় তারা তাদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে মোবাইল ব্যবহার কমিয়ে চার্জ ধরে রাখারও পরামর্শ দেন।
আরইবির চিফ ইঞ্জিনিয়ার আমজাদ হোসেন বলেন, আমাদের সাতটা পিবিএস ঝুঁকির মধ্যে আছে। তাই আপাতত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে তবে কিছু কিছু পিবিএস এর হেড অফিসে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রাখা হয়েছে। তবে তার পরিমাণ খুবই অল্প। ভোলায় একেবারেই বিদ্যুৎ নেই৷ এই সাতটির বাইরেও বেশ কিছু পিবিএস ঝুঁকিতে আছে, যেমন কক্সবাজার। সেখানেও ঝড়ো হাওয়া বইছে।
তিনি আরও বলেন, উপকূলের বেশিরভাগ এলাকায় ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। তাই সবগুলোই ঝুঁকিরমধ্যে আছে। প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সিত্রাং মোকাবেলায় ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলার অভিজ্ঞতা সামনে রেখেই প্রস্তুতি নিয়েছি৷ মেরামতের সব ধরনের মালামাল, লোকবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফিডার ভিত্তিক কাজ বন্টন, লোকালের সাথে যোগাযোগ, টিম এরেঞ্জমেন্ট করা হচ্ছে। এছাড়া অনেককেই বলা হয়েছে মোবাইলে কম কথা বলতে যাতে চার্জ বেশিক্ষন রাখা যায়।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) ভৌগোলিক এলাকা বাদে, খুলনা, বরিশাল ও বৃহত্তর ফরিদপুর বিভাগের ২১টি জেলা ও ২০টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ওজোপাডিকো।
প্রসঙ্গত, ওজোপাডিকোর অধীন বরিশাল বিভাগের ভান্ডারিয়া, নলছিটি, কাঁঠালিয়া, বোরহানউদ্দীন, চরফ্যাশন এবং মনপুরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে। এছাড়া খুলনা বিভাগের ফুলতলা, মোংলা, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর এবং মহেশপুরেও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ আরও ঘনীভূত হয়ে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে। আজ সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকালে ঝড়টি উপকূল থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, সাগর আরও বেশি বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরগুলোকেও ৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে