কাতারকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সূচনা করলো ইকুয়েডর

ইসমাত তোহাঃ-

ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ, গ্যালারি ভর্তি নিজেদের দর্শক। কিন্তু স্বাগতিক হওয়ার সুবিধা কাজে লাগিয়ে দাপট দেখাতে পারেনি মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়া কাতার। পুরো ম্যাচে শাসন করে খেলে ইকুয়েডর।

ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোনো আয়োজক দেশ তাদের প্রথম ম্যাচ হারেনি, এ রেকর্ডে উজ্জীবিত হওয়ার সুযোগ ছিল। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও কাতারকে আশা দেখাচ্ছিল। কিন্তু ম্যাচের শুরুতেই গোল হজম করার উপক্রম। এ যাত্রায় অফসাইডের বাঁশিতে বাঁচা গেলেও ইকুয়েডরকে বেশি সময় আটকানো গেল না। কিছুক্ষণ পরই জাল খুঁজে নিলেন এনার ভ্যালেন্সিয়া, পরের গোলটিও এলো তার পা থেকে। তার জোড়া গোলে বিশ্বকাপে উড়ন্ত সূচনা করলো ইকুয়েডর।

রোববার রাতে আল বাইত স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক কাতারকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ইকুয়েডর। লাতিন অঞ্চলের দেশটির জয়ে বদলে গেল বিশ্বকাপের দীর্ঘদিনের ইতিহাস। ফুটবল বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে কাতারই প্রথম আয়োজক দেশ, যারা নিজেদের প্রথম ম্যাচ হারলো। আগের ২১ আসরের মধ্যে ১৬ আয়োজক দেশ তাদের প্রথম ম্যাচ জেতে, ৬টি আয়োজক দেশ ড্র করে। 

ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ, গ্যালারি ভর্তি নিজেদের দর্শক। কিন্তু স্বাগতিক হওয়ার সুবিধা কাজে লাগিয়ে দাপট দেখাতে পারেনি মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়া কাতার। পুরো ম্যাচে শাসন করে খেলে ইকুয়েডর। ম্যাচের ৫৩ শতাংশ সময় বল নিজেদের পায়ে রাখে তারা। গোলমুখে ইকুয়েডরের নেওয়া ৬টি শটের মধ্যে ৩টি লক্ষ্যে ছিল। কাতারের নেওয়া ৫টি শটের  একটিও লক্ষ্যে ছিল না। এ নিয়ে টানা সাত ম্যাচে নিজেদের জাল অক্ষত রাখলো ইকুয়েডর।

অথচ প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাওয়া কাতার যেভাবে আক্রমণাত্মক শুরু করে, তাতে ভিন্ন আভাসই মিলেছিল। রেফারি ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজাতেই কিক অফ করে লম্বা পাসে ইকুয়েডরের রক্ষণভাগে হানা দেয় তারা। কিন্তু সম্ভাবনা জাগিয়ে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তারা। এরপর মুহূর্তেই পাল্টে যায় ম্যাচের চেহারা। দাপুটে ফুটবলে কাতারের রক্ষণে হানা দিতে থাকে ইকুয়েডর। 

তৃতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো ইকুয়েডর। দারুণ আক্রমণে কাতারের জালে বল পাঠায় তারা। কিন্তু হেড থেকে করা ভ্যালেন্সিয়ার গোলটি অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়। ভিডিও অ্যাসিসট্যান্ট রেফারির (ভিএআর) সাহায্য নিয়ে গোল বাতিল করেন রেফারি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় ফেলিক্স তোরেসের ক্রসে হেড দেওয়ার সময় অফসাইডে ছিলেন মাইকেল এস্ত্রাদা। 

জালের ঠিকানা চিনে ফেলা ইকুয়েডরকে বেশিক্ষণ আটকে রাখতে পারেনি কাতার। ১৬তম স্পট কিক থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন ভ্যালেন্সিয়া। ডি-বক্সে ভ্যালেন্সিয়াকে কাতারের গোলরক্ষক সাদ আল সাইব ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ৩১তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ইকুয়েডর। আনহেলো প্রিকাইদোর ক্রস থেকে লাফিয়ে দারুণ বল জালে জড়ান ভ্যালেন্সিয়া। বিশ্বকাপে চার ম্যাচে এটা তার পঞ্চম গোল। 

প্রথমার্থে আরও কয়েকটি আক্রমণ সাজালেও গোল করতে পারেনি ইকুয়েডর। এই অর্ধে নিষ্প্রভ থেকে যাওয়া কাতার শেষ মুহূর্তে ব্যবধান কমানোর সুযোগ পায়। যদিও সুবর্ণ এই সুযোগটি নষ্ট করে তারা। হাসান আল হায়দোসের অসাধারণ এক ক্রসে ইকুয়েডরের গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান আলমোয়েজ আলী। কিন্তু হেডের চেষ্টা করা আলী বলে ঠিকভাবে সংযোগ করতে পারেননি।

৫৫তম মিনিটে আরও এগিয়ে যেতে পারতো ইকুয়েডর। এ সময় দারুণ সুযোগ পান রোমারিও ইবারা। কিন্তু এ যাত্রায় দলকে বাঁচান কাতারের গোলরক্ষক সাইব। রোমারিওর নেওয়া জোরালো শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান তিনি। ৮৬তম মিনিটে ব্যবধান কমানোর সুযোগ পান বদলি হিসেবে নামা কাতারের মোহামেদ মুনতারি। বাসাম আল রায়ির নিখুঁত থ্রু বল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অসাধারণ এক ভলি করেন তিনি। কিন্তু অল্পের লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ২-০ গোলের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় স্বাগতিকদের।

Md Ismat Toha

Learn More →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *