মতলব বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে অভিভাবক প্রতিনিধিদের হাতাহাতি

স্টাফ রিপোর্টারঃ

চাঁদপুরের মতলব সদরে অবস্থিত পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে পরীক্ষার প্রশ্ন নিয়ে অভিভাবক প্রতিনিধিদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল অনুষ্ঠিত অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নের অক্ষর ছোট হওয়াকে কেন্দ্র করে দুই অভিভাবক প্রতিনিধির মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আর এই ঘটনায় বিদ্যালয়ের অন্তত ৭ শিক্ষার্থী ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুধবার (৭ জুন) দুপুর দুইটায় এই ঘটনা ঘটে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও সরজমিনে জানা যায়, মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা মেনে বুধবার অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা আরম্ভ হয়। পরীক্ষার সময়সূচি অনুসারে ঘটনার দিন নবম শ্রেণীর ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা আরম্ভ হওয়ার ২০ মিনিট আগে শিক্ষকরা প্রশ্নের প্যাকেট খুলে দেখেন প্রণয়নকৃত প্রশ্নের অক্ষর গুলো তুলনামূলকভাবে ছোট হয়েছে। আর এই সময় শিক্ষকদের কক্ষে উপস্থিত থাকা ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক প্রতিনিধি আল মহসিন প্রধান প্রণয়নক্ত প্রশ্নে অক্ষর ছোট হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের প্রশ্ন প্রনয়ণ এবং প্রকাশনার বিষয়টি গোপনীয়তার জন্য আমরা একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়ে থাকি। পরীক্ষা আরম্ভ হওয়ার ২০ মিনিট পূর্বে প্রশ্নের প্যাকেট খোলা হয়। অক্ষর ছোট হওয়ার বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে কোন সমাধানের ব্যবস্থা না করা গেলেও ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনার কোন পূরণের ভিত্তি না ঘটে সেই বিষয়ে অভিভাবক প্রতিনিধিকে আশ্বস্ত করা হয়।

পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানান, পরীক্ষা চলাকালীন সময় বিদ্যালয়ের মাঠের কোণে ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন অভিভাবক প্রতিনিধি সদস্য উপস্থিত ছিলেন। পরীক্ষা আরম্ভ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে আল মহসিন প্রধান হঠাৎ করেই নবম শ্রেণীর পরীক্ষার হলে ঢুকেই পরীক্ষার্থীদেরকে হল থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানান এবং অক্ষর ছোট হওয়ার বিষয়টি অভিভাবকদেরকে নিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন। ঠিক ওই সময় অপর অভিভাবক প্রতিনিধি ইকবাল সরকার ছুটে এসে আল মহসিনকে শান্ত হওয়ার কথা বললে তাদের উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটলে তারা রক্তাক্ত জখম হয়। তাদের এরূপ কর্মকাণ্ড দেখে পরীক্ষার হলে থাকা শিক্ষার্থীরা ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে জানান শিক্ষকরা।

ঘটনার সময় উপস্থিত থাকা অভিভাবক প্রতিনিধি সদস্য মিরান মিয়াজী জানান, অক্ষর ছোট হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রধান শিক্ষকের সাথে আলোচনা করে ভবিষ্যতে এরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করতে পারতাম। কিন্তু আল মহাসিন প্রধানের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা বিব্রত।

অভিভাবক সদস্য ইকবাল সরকার বলেন, পরীক্ষার প্রশ্নগুলো অন্যত্র থেকে ছাপিয়ে আনা হয় এবং পরীক্ষার বিশ মিনিট আগে খোলা হয়। যেহেতু একটি সমস্যা হয়ে গেছে তাই সেটার তাৎক্ষণিক কোন সমাধান ছিল না। তবে প্রশ্ন বুঝতে শিক্ষার্থীদের কোন অসুবিধা হয়নি। কিন্তু সে ( আল মহসিন) বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাকে শান্ত হওয়ার জন্য বলি, কিন্তু সে আমার উপর চওড়া হয়।

এ বিষয়ে অভিভাবক সদস্য আল মহসিন এর মুঠো ফোনে কল করলে উনার স্ত্রী জানান, তিনি বর্তমানে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এবং ঘুমিয়ে আছেন তাই ওনার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে প্রশ্নের অক্ষর ছোট হওয়াকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ে দুই অভিভাবক সদস্যদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় বিদ্যালয়ের অভিভাবক এবং মতলববাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সামনে দুজনের রক্তাক্ত মারামারির বিষয়টি শিক্ষার্থীদের ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধান চান বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা।

Md Ismat Toha

Learn More →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *