প্রাইম ডেস্কঃ
১৩ জুলাই,বৃহস্পতিবার
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ব্যবহার করে গতকাল বুধবার নক্ষত্র সৃষ্টির নতুন একটি ছবি প্রকাশ করেছে নাসা, যা খুব কাছ থেকে তোলা হয়েছে।
রো অফিউচি নামের ক্লাউড কমপ্লেক্স থেকে ছবিগুলো তোলা হয়েছে। রো অফিউচি ক্লাউড কমপ্লেক্স হলো পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের স্টেলার নার্সারি। এটি নতুন নতুন নক্ষত্র গঠনের স্থান হিসেবে পরিচিত। নাসার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিল নেলসন বলেন, মাত্র এক বছরের মধ্যে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ মহাজগৎকে মানুষের চোখের সামনে ভাসিয়ে তুলতে পেরেছে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো পৃথিবী থেকে অনেক দূরে অবস্থিত ধূলিমেঘ ও আলোকে অনেক কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে।
বিল নেলসন আরও বলেন, প্রতিটি নতুন ছবি মানে নতুন আবিষ্কার। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা তাঁদের অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাবেন, যা এক সময় তাঁরা কল্পনাও করেননি। জেমস ওয়েবের ছবিতে প্রায় ৫০টি নবগঠিত নক্ষত্র দেখা গেছে, যেগুলোর ভর আমাদের সূর্যের মতো কিংবা তার চেয়ে তুলনামূলক ছোট। নাসা প্রকাশিত ছবির ওপরের দিক থেকে এক-তৃতীয়াংশ জায়গাজুড়ে বিপুল পরিমাণ হাইড্রোজেন গ্যাস আনুভূমিকভাবে ভেসে থাকতে দেখা গেছে। ডান দিকে লম্বালম্বি করেও এ গ্যাস ভাসতে দেখা যাচ্ছে।
স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউটের জ্যোতির্বিদ ক্রিস্টিন চেন এএফপিকে বলেন, ছবির একেবারে নিচের দিকের অংশে নবগঠিত এবং যথেষ্ট উদ্দীপ্ত একটি নক্ষত্র দেখা গেছে। নক্ষত্রটি যে গ্যাস থেকে জন্মেছে, সে গ্যাস ও ধূলিমেঘের মধ্যে বুদ্বুদ তৈরি করছে।স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউট জেমস ওয়েব টেলিস্কোপটি পরিচালনা করে থাকে।ইন্টারস্টেলার স্পেস মূলত গ্যাস ও ধূলিকণায় ভরপুর। এগুলো নতুন নক্ষত্র ও গ্রহের জন্য কাঁচামাল হিসেবে কাজ করে থাকে।
২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপকে মহাকাশে পাঠানো হয়। ২০২২ সালের ১১ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে ধারণ করা প্রথম পূর্ণাঙ্গ রঙিন ছবি প্রকাশ করেন। ১ হাজার ৩০০ কোটি বছরের মধ্যে এটি মহাজগতের সবচেয়ে স্পষ্ট ছবি বলে দাবি করা হয়। ২০ বছর অভিযান চালানোর মতো যথেষ্ট জ্বালানি জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে আছে। এর যাত্রা শুরুর মধ্য দিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যায়। শিগগিরই কক্ষপথে ইউরোপের ইউক্লিড মহাকাশ টেলিস্কোপের সঙ্গে যোগ দেবে জেমস ওয়েব। মহাজগতের অন্যতম রহস্যের দুই জায়গা—ডার্ক এনার্জি ও ডার্ক ম্যাটার নিয়ে আরও বেশি করে জানার চেষ্টায় ১ জুলাই ইউক্লিড টেলিস্কোপকে কক্ষপথে পাঠানো হয়।