তাফসির হোসেনঃ
১১ আগষ্ট,শুক্রবার
চাঁদপুরের কচুয়ায় দ্বিতীয় বিয়ে করার অপরাধে শালিস বৈঠকে প্রকাশ্যে আকলিমা বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে কচুয়া থানা পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন- উপজেলার সিংআড্ডা গ্রামের ইউপি সদস্য ফরিদ আহমেদ (৩৫), জসিম উদ্দিন (৪৫), আনোয়ার হোসেন (৫০) ও নবীর হোসেন (৪০)। মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বরোচিত নির্যাতনের এমনি একটি ভিডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় তা ভাইরাল হয়ে যায়।
ভিডিওতে দেখা যায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ফরিদ আহমেদ এর উপস্থিতিতে আলমগীর হোসেন নামের এক যুবক গৃহবধূ আকলিমাকে দেশীয় লাঠি (মোত্রাক) দিয়ে তার পিঠে উপর্যপুরি মারধর করে। আশপাশের দু’একজন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাতে পাত্তা না দিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের ময় ২টি মোত্রাক ভেঙ্গে গেলে আলমগীর চেয়ার দিয়ে পেটাতে আসে। এ দৃশ্য যেন মধ্যযুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। অবিলম্বে এ নরপিচাশদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের প্রতি সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সচেতন মহল।
কচুয়া থানার মামলা সূত্রে ও গৃহবধূ আকলিমা জানান, সিংআড্ডা গ্রামের মজুমদার বাড়ির আব্দুর রহিমের সাথে আমার বিয়ে হয়। ২০১৪ সালে সে মৃত্যু বরণ করে। ৫ দিন পূর্বে একমাত্র মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একই গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির আলমগীর হোসেকে বিয়ে করি। বিয়ে করাকে কেন্দ্র করে বুধবার (৯ আগস্ট) কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরিদ আহমেদের বাড়িতে শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শালিস বৈঠকে আমার প্রথম পক্ষের ভাসুর আনোয়ারের ছেলে আলমগীর শালিস চলাকালীন সময়ে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। পরে আমার পরিবারের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে কচুয়া থানার (ওসি) মো. ইব্রাহীম খলিল জানান, ঘটনার দিন রাতে কচুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করলে তাৎক্ষণিক ইউপি সদস্য ফরিদ আহমেদ ও তার ভাই জসিমসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত চার জনকে প্যানেল কোডের সংশ্লিষ্ট ধারায় বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে চাঁদপুরের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামী আলমগীর হোসেন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।