চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায়, চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রাম গামী সাগরিকা এক্সপ্রেসে ঝাঁপ দিয়ে, এক বছরের ছেলে সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা করেন। ২৪ এপ্রিল বুধবার দুপুরে কাঁজিরগাও চৌরাস্তা থেকে বদরপুর পোলের মাঝখান বরাবর এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।
ভরণ-পোষণ না পেয়ে প্রবাসী স্বামীর উপর অভিমান করে সন্তানসহ আত্মহত্যা করেন এই নারী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একমাস পূর্বে প্রবাসী স্বামী ভরণ-পোষণ দেন না বলে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন ওই নারী।
নিহত তাহমিনা আক্তার রিমা (২৪) হাজীগঞ্জ উপজেলার ধড্ডা গ্রামের কুয়েত প্রবাসী মাসুদুজ্জামান হাওলাদারের স্ত্রী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামগামী মেইল ট্রেন সাগরিকার নিচে শিশু সন্তান নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন ওই নারী। ঘটনাস্থল থেকে ট্রেনটি চলে যাবার পর তারা ওই নারী ও তার শিশু সন্তানের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ রেললাইনে দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দেন তারা।
নিহত তাহমিনা আক্তার রিমা হাজীগঞ্জ উপজেলার স্বর্ণা গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে। ৬ বছর আগে পাশের ধড্ডা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে মাসুদুজ্জামান হাওলাদারের সঙ্গে রিমার বিয়ে হয়। তাদের আব্দুর রহমান নামে দেড় বছরের এক শিশু সন্তান এবং মুনতাহা নামে ৪ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। রিমা ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ার সময় দেড় বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে আত্মাহত্যা করেন।
নিহত রিমার মামা জসিম উদ্দিন বলেন, গত ২ মাস আগে কুয়েত থেকে দেশে ফেরার পর মার্চ মাসের ২২ তারিখে স্বামীর বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন রিমা। অভিযোগে বলা হয়, বিয়ের পর রিমার বাবা ৫ লক্ষ টাকা ধার করে এনে জামাতাকে দেন। সেই টাকা দিয়ে বিদেশ যাবার পর থেকেই স্ত্রী-সন্তানদের আর খোঁজ নেয়নি মাসুদুজ্জামান। পুলিশ এব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণের আগেই আবার বিদেশ পাড়ি জমান তিনি।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ জানান, দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে রেলওয়ে পুলিশের কাছে থেকে মরদেহ হস্তান্তর করে নেয় হাজীগঞ্জ থানা।
অন্যদিকে, আত্মাহত্যার আগে তাহমিনা আক্তার রিমা তার ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। তাতে লেখা রয়েছে, তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। তবে তার মেয়েকে দেখে রাখার জন্য আত্মীয় স্বজনদের অনুরোধ জানানো হয় সেই পোস্টে।